আমার মনে হয় বিদেশে পড়তে যাওয়া অথবা উচ্চশিক্ষায় রিসার্চ শুরু করার আগে কিছু ব্যাপার আমাদের বুঝা উচিৎ। যেমন, আমার রিসার্চের ফলাফল কখন মিডিয়াতে আসা উচিৎ, কখন এসব নিয়ে কথা বলা উচিৎ, কখন এসব শেয়ার করা উচিৎ- এসব শিক্ষা আর মানসিকতা নিজের মধ্যে রাখা উচিৎ। সচরাচর একটা কাজ করে সেটা জার্নালে পাবলিশ করে সেটা নিয়ে কিছু লিখা সবাইকে বুঝানোর জন্য শেয়ার করা জেতেই পারে। নিজের আনন্দটা অন্যদের সাথে শেয়ার করা বিজ্ঞানের প্রচার এবং প্রকাশের জন্য দরকার। এটা করলে যারা জানে না তারা যেমন জানবে, তেমনি অনেকেই কাজ করার মোটিভেশন পাবে। কিন্তু, সবকিছুর মধ্যে একটা সীমারেখা থাকে সেটা আমাদের রিসার্চ শুরুর আগেই বুঝতে হবে।
রিসার্চ করার প্রথম একটা ব্যাপার হলো বিবেক/নীতি ঠিক রাখা। মানুষের কাজে আসে এমন কিছু করার চেষ্টা করা। নিজের কৃতিত্ব দফার দফার দেখানোর জন্য যে বিজ্ঞান নয় সেটা আমরা অনেকেই শিখি না, শিখলেও মানি না। ভালো কিছু হলে বিজ্ঞানীরাই বা বিজ্ঞান যারা বুঝে তারাই প্রথম এসব নিয়ে কথা বার্তা বলবে, বিজ্ঞান বুঝে না যারা তারা নিশ্চয়ই নয়। তাই এসব মিথ্যা জিনিষপত্র অথবা যা এখনো সম্পূর্ণ হয় নাই সেটা নিয়ে মাতামাতি করা নিজেকে মূর্খের মত প্রকাশ করা ছাড়া আসলেই কিছু না। যারা বিজ্ঞান বুঝে তারা এসব নিয়ে হাসাহাসি করবে অথবা এড়িয়ে যাবে।
দেশের পত্রপত্রিকাতে শুধু দেখি বিদেশে এই বাংলাদেশী রিসার্চ করে কিছু আবিষ্কার করে পৃথিবী বাঁচিয়ে ফেলেছে, ঐ বিজ্ঞানী দেশ বিদেশের গর্ব আর রক্ষাকর্তা হয়ে উঠেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিদেশের যেখানে কাজটা করা হয়েছে সেখানের মিডিয়াতে এইসবের আনাগুনা তো দূরের কথা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউজেও এসব বড় বড় আবিষ্কারের কথা লিখা হয় না। এসব জিনিষ মিডিয়াতে কারা লিখে, কেন লিখে, কেন মানুষকে উল্টাপাল্টা বুঝানোর চেষ্টা করা হয়, কারা এসব ভুলভাল না বুঝে শেয়ার করে সেটা একটা অদ্ভুত ব্যাপার লাগে। অনেক সময় এসব শেয়ার করে মানুষজন ”intellectual property” law ভঙ্গ করে। নিজের কাজ patent করার আগেই এসব প্রচার করলে patent-rights নষ্ট হয়।
যাইহোক, এসব করা থেকে একজন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের উচিৎ নিজেকে বিরত রাখা। দিনশেষে, উল্টাপাল্টা বলে কয়দিন ফেমাস হওয়া যায়, কিন্তু বিজ্ঞানে বেশীদিন আগানো যায় না, মানুষের সেবাও করা যায় না।
লিখেছেনঃ Saiful Roney
PhD candidate, Faculty of Medicine,
The University of Queensland