আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে পড়াশোনা শেষ করার পর বা গ্র্যাজুয়েশান শেষ হলেই ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা করতে হয় (যদিও জ্ঞানীরা আরও আগে ভেবে রাখে)। ক্যারিয়ার এর দিক থেকে যদি ভাবেন দেশে বিসিএস , অন্যান্য সরকারি চাকুরী ও বেসরকারি চাকুরী ছাড়া তেমন সুযোগ নেই বললেই চলে। ব্রিটিশদের সরকারি আমলাদের অন্যভাবে দেখার যে বীজ আমাদের দিয়ে গিয়েছে সেটা এখনও একই আছে। ক্যারিয়ার চয়েস যার যার নিজের ব্যাপার কিন্তু সমসাময়িক সময়ে বিদেশে পড়তে আসার যে একটি ধারা শুরু হয়েছে সেটা নিজ ও দেশের জন্যই মঙ্গল। ফ্রেস চিন্তা-ভাবনা আর নিজেকে মেলে ধরতে বিদেশে আসার বিকল্প কিছুই নেই। আজকে যে ব্যাপারে কথা বলবো সেটা সদ্য গ্র্যাজুয়েশান করা বা দোটানায় আছেন এমন মানুষদের জন্য।
1. কেন আসবেন বিদেশে:
আপনি যে লেভেল এর স্টুডেন্ট হোন না কেনে আমেরিকা হলো এমন এক দেশ যারা সবার জন্য সমান সুযোগ করে রেখেছে। পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে পড়ে অনেকের পা মাটিতে পড়ে না/আবার প্রাইভেট বা ন্যাশনাল-এ পড়ে হীনমন্যতায় ভুগেন এমন মানুষের অভাব নেই। কিন্তু বিলিভ করেন আমেরিকাতে সবার সুযোগ সমান। আপনার ল্যাংগুয়েজ টেস্ট স্কোর/জিয়ারি/জিম্যাট স্কোর থাকলে কে কোথা থেকে এসেছেন তা দেখার সময় আমেরিকান ইউনিভার্সিটির নেই।
2. আমাকে দিয়ে হবে কিনা:
আপনাকে দিয়ে না হওয়ার মতো কোনও কারণ আসলেই নেই। আমেরিকা আসার প্রতিটা স্টেপ আপনি ঘরে বসে নিজেই অবজারভ করতে পারবেন। কারও হেল্প বা মামা/চাচা ছাড়াই আপনি সব করতে পারবেন।আর আপনারা যেসব এক্সাম লাইফে দিয়ে এসেছেন তার চেয়েও সহজ কিছু পরীক্ষা দিতে হবে কাজের মধ্যে এইটুকু।
3. ল্যাংগুয়েজ টেস্ট /স্ট্যান্ডারাইজ টেস্ট: ইংরেজি ভাষাভাষী দেশে আসাতে হলে অবশ্যই আপনাকে ইংরেজিতে দক্ষতার পরীক্ষায় নাম লিখাতে হবে। এই জন্য আপনার সুবিধা মতো IELTS/Duilingo/Tofel এর যেকোনও একটি টেস্ট-এ অংশগ্রহণ করতে পারেন। আমেরিকা বা কানাডায় আসার জন্য আরেকটি রিকোয়ারমেন্ট হলো জিয়ারি/জিম্যাট। যদিও অনেক ইউনিভার্সিটি এখন এইটা তুলে দিয়েছে তবু যাদের প্রোফাইলে ল্যাকিংস আছে তারা এই টেস্টগুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারেন। যা আপনাকে ফান্ড/এডমিশান-এ এগিয়ে রাখবে। এইসব টেস্ট এর বিস্তারিত আসবে পরের লিখায় ইনশাআল্লাহ।
4. আমার প্রোফাইল ভালো না, আমাকে দিয়ে হবে:
অনেক সম্ভাবনাময় স্টুডেন্ট এই প্রশ্নে এসে হাবুডুবু খায়। সহজ উত্তর হলো, হবে। সিজিপিএ ৩ বা এর কিছু কম, তেমন গবেষণা নেই বা বড় কয়েকটি F আছে তাও আপনাকে দিয়ে হবে। এমন অনেক ছেলেমেয়েকে আমি চিনি যাদের এই অবস্থা থাকার পরেও দিব্যি পিএইচডি শেষ করেছে। আপনিও পারবেন। শুধু সঠিক কিছু স্টেপ আপনাকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবে। আর আমেরিকার এডমিশন প্রসেস হলিস্টিক। আমাদের তথাকথিত ফাস্ট বেঞ্চার যে এডমিশন/ফান্ড পাবে তার গ্যারান্টি দেশে দেওয়া গেলেও আমেরিকাতে দেওয়া যায় না। আপনার সব খারাপ থাকার পরেও হয়তো আপনার SOP টা চোখে পড়ার মতো। ফান্ড/এডমিশান সবই পেয়ে যেতে পারেন। তাই সবার সুযোগ সমান, হতাশ হওয়ার কিছুই নেই।
5. হতাশ হয়ে যাই, কী করবো:
বিদেশে পড়তে আসার আগে সব কিছু নিয়ে টেনশান/হতাশা থাকবেই। সমাজিক/পারিবারিক প্রেসারে কিছুটা হতাশ লাগবেই। হয়তো সময় লাগতে পারে কিন্ত লেগে থাকলে সাফল্য আসবেই। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে এগিয়ে গেলে সাফল্য আসবেই।
সবশেষে কথা হলো, লেগে থাকা আর সঠিক প্রেপারেশান নিলে আপনার সাফল্য সুনিশ্চিত। হায়ার স্টাডি নিয়ে আরও বিস্তারিত আসবে, ইনশাআল্লাহ।
হ্যাপি হায়ার স্টাডি!
© Mahmudun Noby Symon bhai
পিএইচডি স্টুডেন্ট
সাউদার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটি, কারবনডেল।