“ঘরে বসে IELTS এর প্রস্তুতি”

আজকের পর্বে আমরা আলোচনা করবো “ঘরে বসে IELTS এর প্রস্তুতি” সম্পর্কে। তাহলে আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।

হায়ার স্টাডির স্বপ্ন যখন আপনাকে তারা করে বেড়ায়, তখন আপনার জীবনের সাথে জড়িয়ে যাবে IELTS (আইইএলটিএস) নামক শব্দটি। বর্তমানে উচ্চশিক্ষার জন্য যারা দেশের বাহিরে যেতে ইচ্ছুক তাদের জন্য একটি সুপরিচিত শব্দ IELTS (আইইএলটিএস)। কিন্তু অনেকেই শব্দটি শুনে থাকলেও IELTS এর বিষয়ে তাদের স্পষ্ট ও স্বচ্ছ কোন ধারণা নেই। ফলে IELTS কি, কিভাবে IELTS করতে হয়, করে কি লাভ, কিভাবে শুরু করবেন, সফলতা পাবেন প্রভৃতি প্রশ্নগুলোয় আপনি দ্বিধান্বিত হতে পারেন। তাই আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করবো IELTS এর আদ্যোপান্ত।

১. IELTS (আইইএলটিএস) কি এবং কেন? এটা খায় না মাথায় দেয়!…..

২.IELTS এর পূর্ণরূপ হলো International English Language Testing System। ১৯৮৯ সালে IELTS যাত্রা শুরু করে এবং পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করে।

৩.IELTS হলো আন্তর্জাতিক মানের একটি পরীক্ষা এবং এই পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার ইংরেজিতে কতটুকু দক্ষতা রয়েছে সেটি যাচাইয়ের পরীক্ষা । অর্থাৎ ইংরেজিতে আপনার কি ধরণের দক্ষতা রয়েছে তার মূল্যায়ন পরীক্ষা এটি।

ইংরেজি ভাষাভাষী রাষ্ট্রে একজন নন-ইংলিশ ব্যক্তি কিভাবে তার মনের ভাব প্রকাশ করবেন, নিজেকে উপস্থাপন করবেন, অন্যের মনের ভাব বুঝবেন, ইংরেজি বলতে, লিখতে, পড়তে, শুনে বুঝতে পারবেন এর মানদণ্ড স্বরূপ IELTS পরীক্ষা নেওয়া হয়। উল্লেখ্য, ইংরেজি ভাষায় আপনার কতটুকু দক্ষতা রয়েছে তা যাচাইয়ের জন্য আরও অনেক পরীক্ষা রয়েছে তবে IELTS হলো তাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় পরীক্ষা।

সাধারণত যারা উচ্চশিক্ষার জন্য যারা দেশের বাহিরে (বিদেশ বলতে সব দেশ নয়, ইংরেজি ভাষাভাষীর দেশগুলো) গমনকারী শিক্ষার্থীরা এবং ইমিগ্রেশন, জব, ট্রেনিং, ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিদেশে যেতে চাইলে IELTS সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়)।

সমগ্র বিশ্বব্যাপী British Council, IDP: IELTS Australia এবং Cambridge English Language Assessment এর অধীনে IELTS পরীক্ষা হয়। প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখ প্রার্থী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকেন। ১৬ বছর বয়স থেকে এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায় এবং কতবার অংশগ্রহণ করতে পারবেন তা নির্ধারিত নয়। অর্থাৎ আপনি যত বার চাইবেন অংশগ্রহণ করতে পারেন।

এখন আসুন এক নজরে দেখে নেই আইইএলটিএস করার উপকারিতা বা সুবিধা গুলো, যদিও আইইএলটিএস করার অনেক সুবিধা রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুবিধাগুলো হলো শুধু এখানে তুলে ধরলাম-

১. উচ্চশিক্ষা (অনার্স, মাস্টার্স, পিএইচডি) গ্রহণের উদ্দেশ্যে।

২. আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার উদ্দেশ্যে।

৩. বিদেশে কোনো চাকরি পেলে, সেখানে বসবাসের উদ্দেশ্যে।

৪. বিদেশে উচ্চশিক্ষা, জব গ্রহণের মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার গঠনের উদ্দেশ্যে।

৫. অনেক দেশের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, সরকারি এজেন্সিগুলো IELTS এর স্কোরের উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বারোপ করে থাকে।

৭. আমেরিকার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন, GRE,Gmate,ACT, TOFEL এসব এর পাশা পাশি IELTS গ্রহণ করা হয়ে থাকে।

৮. ইংরেজির দুর্বলতা কাটিয়ে দেশে ভালো চাকরির আশায়।

৯. ইংরেজি ভাষাভাষী মানুষের সাথে চাকরি ও ব্যবসাসূত্রে যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে।

এতোক্ষণ আমরা জানলাম, আইইএলটিএস কি এবং এর উপকারিতা গুলো।

এখন আমরা চলুন জেনে নেই আইইএলটিএস এর IELTS এর প্রশ্ন কাঠামো সম্পর্কে।

আইইএলটিএস (IELTS) টেস্টকে চার ভাগে ভাগ করা যায়-

১. Accademice IELTS (একাডেমিক আইইএলটিএস)

২. UKVI IELTS

৩. General Training IELTS (জেনারেল ট্রেনিং আইইএলটিএস)

৪.IELTS life skills.

তবে বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্টুডেন্টরা academic IELTS এবং UKVI IELTS (UK Study purpose) দিয়ে থাকে। আর General Training IELTS মূলত যারা দেশের বাহিরে ইমিগ্রেন্ট বা স্কিল ওয়ার্ক পারমিটে আসে তারা দিয়ে থাকে।

তবে আমাদের মূল উদ্দেশ্য যখন একাডেমি আইইএলটিএস নিয়ে , তাই আমরা কেবল এই বিষয়েই বিস্তারিত আলোচনা করবো।

এবার আসুন আইইএলটিএস পর প্রশ্নের ধরন একটু বিস্তারিত আলোচনা করি।

আইইএলটিএস টেস্ট দুটিকে( Accademic & GT) ৪টি পোর্শনে স্পিলিড করা হয়েছে।

এগুলে হলো

1. Reading

2.Writing

3.listening

4.Speaking

1. Reading(রিডিং): রিডিং টেস্টের জন্য আপনাকে ১ ঘন্টা সময় দেওয়া হবে ও ৩টি অনুচ্ছেদ থেকে ৪০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। রিডিং টেস্টের মাধ্যমে আপনার পড়ার দক্ষতা যাচাই করা হয়। টেস্টের অনুচ্ছেদ থেকে Gap fill, summary, true false nit given. Yes no not given, list of headingস,MCQ এর সঠিক উত্তর খুঁজে বের করতে হয় এবং উত্তর গুলো আপার কেইজ বা ক্যাপিট্যাল লেটারে লওখতপ হয়। একাডেমিক টেস্টের অনুচ্ছেদগুলো বেশ বড় এবং এগুলো সংবাদপত্র, বই, ম্যাগাজিন থেকে নেওয়া হতে পারে যা থেকে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করা হয়। এগুলো সাধারণত গবেষণা ও বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা।একাডেমিক টেস্টের চেয়ে জেনারেল টেস্ট তুলনামূলক সহজ। দৈনন্দিন জীবনে মুখোমুখি হতে হয় এমন বিষয় নিয়ে এই টেস্ট হয়। সংবাদপত্র, বই, বিজ্ঞাপন, হ্যান্ডআউট, ম্যাগাজিন থেকে অনুচ্ছেদ তুলে দেওয়া হয়।

2.Writing(রাইটিং): রাইটিং অংশ হচ্ছে সম্পূর্ণ পরীক্ষার সবচেয়ে কঠিন অংশ। তবে এটি সহজ না কঠিন তা নির্ভর করে আপনার প্রস্তুতি ও দক্ষতার উপর। টেস্টে আপনার ইংরেজি লেখার দক্ষতা যাচাই করা হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে যথেষ্ট সৃজনশীল হতে হবে। এই টেস্টে ১ঘন্টা সময়ের মধ্যে আপনাকে দুইটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রথম অংশে একটি গ্রাফ, ডায়াগ্রাম, চার্ট, বা ম্যাপ দেওয়া থাকে যেটি নিজের ভাষায় বিশ্লেষণ করতে হয়। পরের অংশে একটি মতামত( Opinion easy, advantage disadvantage, Cause and effect etc) থাকবে সেটির পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতে হবে। তবে প্রথম অংশের চেয়ে দ্বিতীয় অংশে বেশি নাম্বার থাকে এবং সময়ও বেশি দিতে হয়।

IELTS Related Another Post: ঘরে বসে IELTS প্রস্তুতি নেওয়ার উপায়

একাডেমিক টেস্ট ও জেনারেল টেস্টে কিছুটা পার্থক্য আছে। জেনারেল টেস্টে প্রথম প্রশ্নে গ্রাফ, ডায়াগ্রাম, চার্ট বা ম্যাপের পরিবর্তে ফরমাল বা পারসোনাল লেটার লিখতে দেওয়া হয়।

3.listening (লিসেনিং): লিসেনিং এর জন্য আপনাকে ৩০ মিনিট সময় দেওয়া হবে। আপনাকে ৩০ মিনিটের অডিও ভিত্তিক এই পরীক্ষায় ৪টি ভাগে ১০টি করে মোট ৪০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রতিটির নির্ণারিত মান ১ এই ভিত্তিতে সঠিক উত্তরের উপর নির্ভর করে ব্যান্ড স্কোর দেওয়া হয়। লিসেনিং আপনার কথোপকথন বোঝার দক্ষতা যাচাই মূলক পরীক্ষা। ৩০ মিনিটের এই ৪টি রেকর্ডটি আপনার মাত্র একবার শোনার সুযোগ থাকবে। এটি শোনার পর উত্তরপত্রে আপনাকে উত্তর গুলো লিখতে হবে এবং আরো দশ মিনিট পাবেন উত্তর গুলো উত্তর পত্রে ট্রান্সফার করার জন্য।এবং এটাও খেয়াল রাখতে হবে স্পেলিং মিস্টেক হলে আপনার মার্ক কার্ক কাটা যাবে, এছাড়া উত্তর গিলো আপনার কেইজ বা ক্যাপিট্যাল লেটারে লিখতে হবে। তাই আপনাকে এই পরীক্ষার সময় খুব মনোযোগী হতে হবে।

4.Speaking (স্পিকিং): ইংরেজিতে আপনি কতটা গুছিয়ে, সুন্দর করে ও সাবলীলভাবে কথা বলতে পারেন সেই দক্ষতা যাচাই করা হয় স্পিকিং টেস্টের মাধ্যমে। পরীক্ষার্থীদের ১১ থেকে ১৪ মিনিটের পরীক্ষা দিতে হয়। প্রথম অংশে কিছু সাধারণ প্রশ্ন করা হয় যেমন: পরিবার, পড়াশোনা, কাজ, শখ ইত্যাদি নিয়ে। দ্বিতীয় অংশে Cue card বা একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ২ মিনিট কথা বলতে হয় এবং এর আগে ঐ বিষ বা টপিকটা নিয়ে এক মিনিট চিন্তা করার সময দেয়া হয়। তৃতীয় অংশে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে পরীক্ষকের সঙ্গে ৪-৫ মিনিট কথোপকথন করতে হয় বা প্রশ্ন-উত্তর চলে।

আমরা পরের প্রশ্নে আলোচনা করবো

IELTS student এর পড়ার রুটিন কেমন হওয়া উচিত?

ধন্যবাদ

© Banglay IELTS

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *