বিদেশে পড়তে যাওয়ার ১ বছর আগে থেকে করণীয়:

(আজকের পোস্টটি শুধুমাত্র কানাডার জন্য নয়, যেকোনো দেশে পড়তে গেলে এই তথ্যগুলো আপনাকে সহায়তা করবে।)

১. আপনার নাম এবং আপনার পিতা-মাতার নামের সাথে মিল রেখে সার্টিফিকেটে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধন করবেন, হতে পারে নামের বানানে ভুল বা অন্য কিছু। এসময়ে একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন, আপনার পিতা-মাতার ভোটার আইডিতে যে নাম আছে ওই নামই যেন সার্টিফিকেটে থাকে। মোট কথা, আপনার জন্মসনদ, সার্টিফিকেট এবং বাবা-মায়ের এনআইডিতে যেন সেইম নাম থাকে।

২. পাসপোর্ট তৈরি: পাসপোর্ট তৈরির সময় পূর্বের সার্টিফিটের মতো নাম এবং স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানার দিকে খেয়াল রাখবেন। এমন যেন না হয় জন্মসনদে আছে বর্তমান ঠিকানা বরিশাল কিন্তু পাসপোর্টে কোনোভাবে এসে গেছে নোয়াখালী।

(১,২ নং পয়েন্টে কোনোভাবে ভুল হলে এগুলোর সংশোধন; বিদেশে পড়তে যান বা না-যান, এমনিতেই জরুরি এবং সংশোধন একটু সময় সাপেক্ষ বিষয়।)

৩. SSC এবং HSC এর মার্কশিট এবং সার্টিফিকেট বোর্ড থেকে সংগ্রহ করা এবং মাস্টার্সে যেতে চাইলে অনার্সের সার্টিফিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস থেকে সংগ্রহ করে রাখা।

৪. সার্টিফিকেট সংগ্রহের পর এগুলো শিক্ষা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িত করা।

৫. IELTS Preparation: আইইএলটিএস পরীক্ষার প্রিপারেশন টা একটু আগে থেকেই নেওয়া ভালো। কারণ, অনেকের কাঙ্ক্ষিত স্কোর তুলতে অনেক বেশি সময় লেগে যায় এবং এই সময়ের কারণে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন মিস করে ফেলে। যার জন্য এডুকেশন গ্যাপ বেড়ে যায় এবং ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।

৬. স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছা থাকলে IELTS এর পাশাপাশি আন্ডারগ্র্যাজুয়েটের স্টুডেন্টদের জন্য SAT/ACT পরীক্ষা এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্য GRE/GMAT পরীক্ষার প্রস্তুতি আগে থেকে নেওয়া ভালো।

৭. আপনার পরিচিত বা যেসকল শিক্ষকরা আপনাকে ভালো জানে, এই সকল শিক্ষকদের মধ্য থেকে দুইজন বা তিনজন টিচারের রেকমেন্ডেশন লেটার সংগ্রহ করে রাখা।

৮. SOP লেখার প্রিপারেশন: বিদেশে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য SOP লেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টির প্রিপারেশন অনেক আগে থেকেই নেওয়া ভালো। কীভাবে আপনি এটাকে লিখবেন, এর জন্য অভিজ্ঞ ভাইদের সহযোগিতা নেওয়া বা বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ বা অন্য কোথা থেকে সহযোগিতা নেওয়া এবং নিজের মতো করে এটাকে প্রস্তুতি নেওয়া যাতে SOP এর ভাষাটা নিজের মতো করে হয়।

৯. ব্যাকগ্রাউন্ড এর সাথে মিল রেখে আপনি যে দেশে পড়তে যেতে চাচ্ছেন ওই দেশের মিনিমাম পাঁচটা বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে বের করে রাখা এবং যে সাবজেক্টে পড়তে যেতে চাচ্ছেন ওই সাবজেক্টটা যেন আপনার পূর্বের পড়া সাবজেক্ট এর সাথে মিল থাকে। ধরেন, আপনি সায়েন্স থেকে এইচএসসি পাশ করছেন সুতরাং আপনাকে এমন কোন সাবজেক্টই পরবর্তীতে চয়েজ করতে হবে যেটা সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ড এর সাথে মিল থাকে বা ব্যবসায় শিক্ষা বিষয় থেকে আগে পড়াশোনা করে থাকলে এমন সাবজেক্ট পছন্দ করতে হবে যেটা ব্যাবসায় শিক্ষার সাথে মিল থাকে।

১০. আপনার বাজেট, আপনার পছন্দের শহর সহ সব কিছু বিষয় মাথায় রেখে মিনিমাম পাঁচটা বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ আগে থেকে পছন্দ করে রাখা।

১১. আপনি যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দ করবেন সে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের ডেডলাইনের দিকে খেয়াল রাখা এবং সে অনুযায়ী আগে থেকেই আবেদন করা।

১২. ভলেন্টিয়ার সংগঠনে যুক্ত: আপনি যদি খুব সহজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন করে সিলেক্ট হতে চান বা স্কলারশিপ পেতে চান এবং সহজেই ভিসা পেতে চান তাহলে কিছু ভলেন্টিয়ার সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকা এবং তার যথেষ্ট প্রমাণ সংগ্রহ করে রাখা।

১৩. বিদেশে গেলে বেশিরভাগ সময় আপনাকে নিজেকে নিজের রান্না করে খেতে হবে সুতরাং আগে থেকেই দেশ থেকে রান্না শিখে যাওয়া টা ভালো।

১৪. যদি ড্রাইভিং শেখা সম্ভব হয় তাহলে শিখে ফেলুন। ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করে রাখুন এবং যদি আরও সম্ভব হয় তাহলে ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করে রাখতে পারেন।

১৫. যদি সম্ভব হয় তাহলে কম্পিউটারে নিজের স্কিল দেশ থেকে আপগ্রেড করে যান। যেমন: microsoft-office, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্টের কাজ শেখা এবং সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে রাখতে পারেন। এটা বিদেশে আপনাকে অনেক সাপোর্ট দিবে।

আমার কাছে এই ১৫ টা পয়েন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়ছিল। আশা করি, অনেকের কাজে আসবে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংবলিত এই লেখাটি লিখেছেন শেখ সাইফুল ইসলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *